প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : কালিঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে আদি গঙ্গার পাড় থেকে বস্তা ভর্তি পোড়া টাকা উদ্ধারের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করলেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা । সোমবার বিকালে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার কেঁউটা গ্রামে অনুষ্ঠিত বিজেপির সভায় যোগ দিয়ে রাহুল সিনহা এই দাবি করেন। এই প্রসঙ্গে রাহুল বাবু আরো বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাশে আদি গঙ্গার পাড় থেকে বস্তা ভর্তি পোড়া টাকা উদ্ধারের ঘটনার সাথে কালো টাকার কাহিনী যুক্ত আছে । ইডি , সিবিআই, না অন্য কোন ভয়ে , কারা ওই টাকা পোড়ালো তার তদন্ত হওয়া দরকার । রাহুল সিনহা দাবি করেন ওই এলাকার লোকের তো এত টাকা নেই । ওই এলাকার লোকেদের সবারই তো টালির চালার বাড়ি । ওখানেতো একটাই রাজবাড়ি । সেটা ভাইপোর বাড়ি । নিরপেক্ষ এজেন্সি দিয়ে তদন্ত করলেই সব খোলসা হয়েযাবে বলে রাহুল সিনহা এদিন মন্তব্য করেন । নেতাজির জন্মদিবসের দিন কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে হওয়া সরকারী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে যাওয়ার সময়ে ’জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়া হয় । এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের কড়া কথা শুনিয়ে বক্তব্য না রেখে মঞ্চ থেকে নেমে যান । প্রাধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে হওয়া সরকারী অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম ’ ধ্বনি কেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে রাহুল সিনহা বলেন, মমতার জন্য ওই নেতাজি অপমানিত হয়েছেন । উনি সুকৌশলে ওই দিনকার মঞ্চ রাজনৈতিক মঞ্চ রাজণৈতিক মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করেছেন । যার ষড়যন্ত্রকারী মমতা নিজেই । রাজনৈতিক অভিসন্ধি পুরণের জন্য মমতা ওই দিনের অনুষ্ঠানের মঞ্চটিকে কাজে লাগিয়ে ছিলেন । রাহুল সিনহা দাবি করেন, এইসব অভিসন্ধি কাজে লাগবে না । কারণ দুর্গা মাতা ও শ্রী রামচন্দ্রের অভিশাপে তৃণমূল ইতিমধ্যেই ছাড়খাড় হয়ে গিয়েছে । এবার নেতাজির অভিশাপও উপর থেকে তৃণমূলের উপরে পড়বে । তৃণমূলের বিনাশ হবেই । আর কয়েকদিন বাদ মমতা এবং তাঁর ভাইপো অভিষেকের সন্ন্যাস ছাড়া ,রাম নাম ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। “ যদিও রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি স্বপন দেবনাথ এদিন মেমারিতে দলের কর্মসূচীতে যোগ দিয়ে দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার জন্যই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সরকারী অনুষ্ঠানে ’জয় শ্রীরাম ধ্বনি ’ দিয়েছে বিজেপির লোকজন । এমন ঘটনার মধ্য দিয়ে বিজেপির লোকজন শুধু বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেই অপমান করেনি , নেতাজিকেও অপমান করেছে । ” ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ঘটনা প্রসঙ্গ নিয়ে রাহুল সিনহা মুখ্যমন্ত্রী কে কটাক্ষ করতেও ছাড়েন নি । তিনি বলেন ,“ ’দিদির ‘ইনশা আল্লা’ শ্লোগানে আদত রয়েছে । সেই দিদি কি ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনে খুশি হতে পারেন। ‘জয় শ্রীরামে’ দিদির এত নারাজ হবার কি বা আছে ।‘ জয় শ্রীরামে ’ দিদি যত নারাজ হবেন ততই ‘জয় শ্রীরামের’ পপুলারিটি বাড়বে । এখন গ্রামের বাচ্চা ছেলেরাও ‘জয় শ্রীরাম ’ বলছে । রাহুল বাবু দাবি করেন, ‘জয় শ্রীরাম ’ এখন জনতার শ্লোগান হয়ে গিয়েছে । দিদি যত বিরক্ত হবেন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ততই উঠবে । ‘জয় শ্রীরামের’ কেরামতিও ততই বাড়বে বলে রাহুল সিনহা মন্তব্য করেছেন ।” রাহুল সিনহা জনসভা মঞ্চ থেকে ঘোষনা করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পাকিস্তানি। তাই তিনি ‘মেটিয়াবুরুজকে’ মিনি পাকিস্তান বলেছেন।আর চার মাস পর আমরা সরকারে আসলে ‘মিনি পাকিস্তান নয় ,আশল পাকিস্তানে ওকে (ফিরহাদকে ) পাঠাবো ’ বলে হুঁশিয়ারি দেনন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা।
পাশাপাশি রাহুল সিনহা বলেন, পিকে ও ভাইপোর অত্যাচারে দলে দলে তৃণমূল নেতা কর্মীরা বিজেপিতে আসছে।সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনের আগে রাজ্যে কোড অফ কণ্ডাক্ট চালু হয়ে গেলে পুলিশকে দিয়ে আর মিথ্যা মামলা দেওয়া যাবে না । তখনই দলে দলে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দেবেন। তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেডে পড়ে থাকবে শুধু পিসি আর ভাইপো ।